তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তথা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আমাদের দেশে বিতর্কের শেষ নেই। নব্বইয়ের দশকের প্রথমদিকে নির্দলীয় সরকারব্যবস্থার ধারণা উদ্ভাবনের পর এর পক্ষে যে যুক্তি হয় তা হলো, দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর এর বিরোধিতাকারীদের বক্তব্য হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্কিত হয়ে গেছে। তাছাড়া এটি যেহেতু এখন আর সংবিধানে নেই, তাই সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
দর্শক আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণ আছে যে, নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংযোজন করা হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যে নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলে বিবেচিত হয়েছিল।
এরপর সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের এক রায়ের প্রেক্ষিতে ২১ জুলাই ২০১০ তারিখে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে একটি বিশেষ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়।
দশ মাসের মেয়াদকালে কমিটি ২৬টি বৈঠক করে এবং ১০৪ জন বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ রাজনীতিবিদদের পরামর্শ গ্রহণ করে। বিশেষ সংসদীয় কমিটি ২৯ মে ২০১১ তারিখে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার রেখেই সংবিধান সংশোধনের সর্বসম্মত সুপারিশ প্রস্তুত করে। তবে পরদিন নির্বাহী বিভাগের প্রধান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর কমিটির সিদ্ধান্ত পাল্টে যায়। এরপর ৮ জুন ২০১১ তারিখে স্পিকারের কাছে প্রেরিত প্রতিবেদনে কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দিয়ে এবং সংসদ বহাল রেখেই সংবিধান সংশোধনের চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করে, যার ভিত্তিতে ৩০ জুন তারিখে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী একতরফাভাবে সংসদে পাশ হয়।
অথচ বিশেষ সংসদীয় কমিটির সভায় আওয়ামী লীগ ও মহাজোট নেতাদের প্রায় সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছিলেন।
দর্শক চলুন, আমরা দেখে নিই তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেভাবে আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত ও বাতিল হলো এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতারা কে কী বলেছিলেন।
ভিডিওটি ভালো লেগে থাকলে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন এবং ভিডিওটি শেয়ার করুন।
コメント